Wednesday, February 10, 2010

 জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও খাদ্যাভ্যাস

বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও এর সম্ভাব্য প্রভাব বাংলাদেশসহ বিশ্বে একটি বহুল আলোচিত বিষয়। দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এর প্রভাবে আমাদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ফলে খাদ্যনিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কৃষি উত্পাদন হ্রাস পাওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ধানের উত্পাদন কমবে প্রায় আট শতাংশ এবং গমের উত্পাদন কমবে প্রায় ৩২ শতাংশ। ফলে খাদ্যনিরাপত্তায় দেখা দেবে এক অনিশ্চয়তা।
পাশপাশি নতুন ধরনের জলবায়ু পরিস্থিতি নতুন ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা এবংতা মোকাবেলার জন্য খাদ্যগুণের নতুন চাহিদাও সৃষ্টি করতে পারে। এ দিকেও নজর প্রয়োজন।
সরকার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর সঙ্গে খাদ্যনিরাপত্তার ভবিষ্যত্ ঝুঁকি মোকাবিলায় খাপ খাওয়ানোর কৌশল নির্ধারণ, ফসলের জাত নির্বাচন ও উত্পাদন পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনবিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে এবং তা অব্যাহত আছে।
তবে এ কথাও ঠিক, গবেষণা কার্যক্রমের পাশাপাশি যদি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন এনে খাপ খাওয়ানোর এ কৌশলটিও বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে এটিও খাদ্যনিরাপত্তায় কিছুটা হলেও ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে মনে করি। আর সে কৌশলটি হলো, খাদ্যের অপচয় রোধে কোনো অনুষ্ঠানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্যের আয়োজন না করা।
পুরোনো একটি প্রবাদ বাক্য আছে, ‘বাঁচার জন্য খাওয়া, খাওয়ার জন্য বাঁচা নয়।’ কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের দৈনন্দিন, পারিবারিক, সামাজিক ইত্যাদি অনুষ্ঠানে আপ্যায়নকালে খাদ্য সরবরাহের তালিকা দেখলে মনে হয় খাওয়ার জন্যই বাঁচা।
যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে দুই পদের খাবারের বিধান করে খাদ্যের অপচয় রোধ করা যেতে পারে। এ কাজ শুরু করা যেতে পারে সরকারি পর্যায়ে রাজস্ব বাজেট দ্বারা যেকোনো সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ইত্যাদিতে আপ্যায়নের ক্ষেত্রে এবং সরকারি কর্মকর্তারা দেশের মধ্যে কোনো সরকারি ভ্রমণে গেলে। সরকারিভাবে খাদ্য অপচয় কমানো সম্ভব হলে সাধারণ জনগণও তখন উত্সাহিত হবে।
মো. বিল্লাল হোসেন
পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর

তথ্যসূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, তাং 14.10.2009

No comments:

Post a Comment