বন্যা, খরা, সুনামি বা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে—আর তা মোকাবিলার লক্ষ্যেই সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে চলছে পাঁচ দিনব্যাপী তৃতীয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। এ ধরনের প্রথম এবং দ্বিতীয় আয়োজনগুলো হয়েছিল এই জেনেভা শহরেই ১৯৭৯ এবং ১৯৯২ সালে, জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেলের অধীনে।মানব সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান প্রযুক্তির উন্নতি যেমন মানব সমাজকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যাচ্ছে। আবার তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই এবং মনুষ্য সমাজের লাগামহীন অবহেলার কারণে বিশ্বজুড়ে চলেছে প্রকৃতিগত নানা সংকট। তার আলামতও পৃথিবীর নানা অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে।
অতীতে প্রকৃতিগত দৈবদুর্যোগকে থামাতে মানুষের কোনো হাত নেই বলে মনে হলেও, আধুনিককালে বিজ্ঞানীরা এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নানা বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। পৃথিবীর নানা প্রান্তরের বন্যা, খরা, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত বরফহীনতা বা বরফপাত প্রভৃতি জলবায়ুগত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গবেষণা চলেছে। গবেষণা হচ্ছে কীভাবে এই দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণ পেয়ে পরিবেশবান্ধব বসুন্ধরা মনুষ্য বাসোপযোগী করে রাখা যায়। পাশাপাশি আগাম সতর্ক বার্তা দিয়ে সুনামি বা হারিকেনের মতো দুর্যোগ বা এশিয়া-আফ্রিকার দুর্গম অঞ্চলেও কৃষকেরা যাতে আসন্ন খরা ও বন্যার আগাম বার্তা পেয়ে সতর্ক হন।
জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেল এবং বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার পক্ষ থেকে ১৯৭৯ সালের প্রথম সম্মেলনেই পৃথিবীর নানা দেশের সমন্বয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আন্তর্জাতিক বহুদেশীয় প্যানেল গঠিত হয়। সঙ্গে গঠিত হয় বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া ও প্রকৃতি বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের আন্তর্জাতিক প্যানেল—যার নাম দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু গবেষণা পরিকল্পনা। যেগুলো পরিচালিত হচ্ছে জাতিসংঘ জলবায়ু ও আবহাওয়াবিষয়ক প্যানেল থেকে।
এ ছাড়া জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি সংস্থা বা ইউনেস্কো, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান কমিশন এবং আন্তসরকারি মহাসাগরীয় কমিশন প্রভৃতি সংস্থাগুলোর অবদানের জন্য এবং বিশ্বব্যাপী প্রকৃতিকে পরিবেশবান্ধব রাখার প্রয়াসের জন্য জাতিসংঘের এই উদ্যোগ ২০০৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে।
প্রথম সম্মেলনের দৃষ্টিকোণ থেকে ১৯৯২ সালে দ্বিতীয় জলবায়ু সম্মেলন, যাকে বলা হয় বিশ্ব জলবায়ু কনভেনশন যা জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের সবিশেষ হালহকিকত এবং আগামী দিনের বিশ্বব্যাপী করণীয় বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।
এবারের সম্মেলনের উদ্যোক্তা জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেল ও তাদের এজেন্সিসমূহ। তৃতীয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী দৈবদুর্যোগ ঠেকাতে সমস্যা ও করণীয় বিষয়, বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ুর পার্থক্য এবং পরিবর্তন রোধে বালিতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের বা কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ এবং পরিবর্ধন। এ ছাড়া আফ্রিকায় নাইরোবি সম্মেলনের কর্মসূচি অনুযায়ী খরা ও খাবার পানীয় সমস্যার দুর্ভোগ কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা।এবারের জেনেভা সম্মেলনে যে মূল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ রোধে নতুন মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিশ্বের সব প্রান্তের জলবায়ুবিষয়ক সব পূর্বাভাস এবং তথ্য-উপাত্ত সমন্বিতভাবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ঋতু ও সময়ভিত্তিক স্কেলের মাধ্যমে বিশ্ব জলবায়ুর পূর্বাভাস নির্ণয়। এর সঙ্গে সামাজিক কারণে, জলবায়ু পরিবর্তন ও এই পরিবর্তনের কারণে নানাবিধ প্রকৃতিগত সমস্যা যা কৃষিক্ষেত্রে বা খাদ্য নিরাপত্তা, বনবিষয়ক, জ্বালানি, পানি, স্বাস্থ্য, গ্রাম ও নগরায়ণ, পর্যটন, বন্যপ্রাণী, ব্যবসা, পরিবহন বা এককথায় যা মানুষের সমাজ অর্থনৈতিক জীবনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
উদ্যোক্তারা বলছেন, জলবায়ুবিষয়ক সব তথ্য-উপাত্ত আগামীতে মনুষ্য ও প্রকৃতিগত কারণে জলবায়ু পরিবর্তনরোধে সহায়ক হিসেবেই কাজ করবে, সে ক্ষেত্রে সম্মেলনে মূল বিষয়গুলো ছাড়াও কিছু সহায়ক বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যেমন জলবায়ু পূর্বাভাসের বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, প্রকৃতিগত সংকট ব্যবস্থারোধে প্রয়োজনীয় তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা। প্রকৃতির প্রভাব ও পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বিশ্ব মানবতাকে প্রকৃতিগত সংকটের পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ককরণ ব্যবস্থার সমন্বয় সাধন।
পরিবেশবাদীরা আশা করছেন, জলবায়ু সংকটের উন্নয়ন ঘটাতে বিজ্ঞানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সমন্বিত ব্যবস্থা যা আঞ্চলিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবেই করতে হবে এবং এই ব্যবস্থার কার্যকরী ব্যবহারের মাধ্যমে জলবায়ুর বৈসাদৃশ্য ঠেকাতে অনেকটাই সহায়ক হবে। তারা আরও বলেছেন, কোনো দেশ বা জাতি বা মহাদেশ এককভাবে বিশ্বকে রক্ষা করতে পারবে না, তাই দরকার সমন্বিত বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্ব কর্মসূচি।
জেনেভার বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে একটি বিশ্বজনীন সিদ্ধান্ত ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে পৃথিবীর ১৫০টি দেশের প্রায় এক হাজার ৫০০ বিজ্ঞানী, পরিবেশবাদী, সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও কর্মী এবং মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপ্রধানেরা অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জেনেভা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের পাশাপাশি সর্বমোট ২০ জন রাষ্ট্রপ্রধান সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া সম্মেলনে এসেছেন জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বান কি মুন। তবে এই জলবায়ু এবং জীববৈচিত্র্য সংকটরোধে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সমন্বিত বা বৈশ্বিক কাঠামোর সবটাই নির্ভর করবে বিশ্বব্যাপী মানব সমাজের এই বিষয়ে সচেতনতা ও সাবধানতার ওপর।
পশ্চিমা বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বনডাই- অক্সাইড গ্যাসের নির্গমন যেমন জলবায়ুর তাপমাত্রার বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে, পাশাপাশি আমাদের দেশের শিল্পকারখানাগুলোর রাসায়নিক বর্জ্য নদী-নালায় প্রবাহিত হয়ে পরিবেশ বিষময় করে তুলেছে। নদী-জলাশয় দখল বা বাড়ির আবর্জনা ছাদ বা বারান্দা থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার প্রবণতা বা যত্রতত্র প্লাস্টিক ব্যাগ বা বোতল ফেলে রেখে পরিবেশবান্ধব অবস্থা তৈরিতে অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে।
পৃথিবীকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রয়োজন মানবজাতির পরিবেশবান্ধব আচরণ আর তবেই বাঁচবে এই বসুন্ধরা।
সরাফ আহমেদ: প্রথম আলোর হ্যানোভার (জার্মানি) প্রতিনিধি।
অতীতে প্রকৃতিগত দৈবদুর্যোগকে থামাতে মানুষের কোনো হাত নেই বলে মনে হলেও, আধুনিককালে বিজ্ঞানীরা এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নানা বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। পৃথিবীর নানা প্রান্তরের বন্যা, খরা, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত বরফহীনতা বা বরফপাত প্রভৃতি জলবায়ুগত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গবেষণা চলেছে। গবেষণা হচ্ছে কীভাবে এই দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণ পেয়ে পরিবেশবান্ধব বসুন্ধরা মনুষ্য বাসোপযোগী করে রাখা যায়। পাশাপাশি আগাম সতর্ক বার্তা দিয়ে সুনামি বা হারিকেনের মতো দুর্যোগ বা এশিয়া-আফ্রিকার দুর্গম অঞ্চলেও কৃষকেরা যাতে আসন্ন খরা ও বন্যার আগাম বার্তা পেয়ে সতর্ক হন।
জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেল এবং বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার পক্ষ থেকে ১৯৭৯ সালের প্রথম সম্মেলনেই পৃথিবীর নানা দেশের সমন্বয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আন্তর্জাতিক বহুদেশীয় প্যানেল গঠিত হয়। সঙ্গে গঠিত হয় বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া ও প্রকৃতি বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের আন্তর্জাতিক প্যানেল—যার নাম দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু গবেষণা পরিকল্পনা। যেগুলো পরিচালিত হচ্ছে জাতিসংঘ জলবায়ু ও আবহাওয়াবিষয়ক প্যানেল থেকে।
এ ছাড়া জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি সংস্থা বা ইউনেস্কো, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান কমিশন এবং আন্তসরকারি মহাসাগরীয় কমিশন প্রভৃতি সংস্থাগুলোর অবদানের জন্য এবং বিশ্বব্যাপী প্রকৃতিকে পরিবেশবান্ধব রাখার প্রয়াসের জন্য জাতিসংঘের এই উদ্যোগ ২০০৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে।
প্রথম সম্মেলনের দৃষ্টিকোণ থেকে ১৯৯২ সালে দ্বিতীয় জলবায়ু সম্মেলন, যাকে বলা হয় বিশ্ব জলবায়ু কনভেনশন যা জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের সবিশেষ হালহকিকত এবং আগামী দিনের বিশ্বব্যাপী করণীয় বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।
এবারের সম্মেলনের উদ্যোক্তা জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেল ও তাদের এজেন্সিসমূহ। তৃতীয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী দৈবদুর্যোগ ঠেকাতে সমস্যা ও করণীয় বিষয়, বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ুর পার্থক্য এবং পরিবর্তন রোধে বালিতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের বা কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ এবং পরিবর্ধন। এ ছাড়া আফ্রিকায় নাইরোবি সম্মেলনের কর্মসূচি অনুযায়ী খরা ও খাবার পানীয় সমস্যার দুর্ভোগ কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা।এবারের জেনেভা সম্মেলনে যে মূল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ রোধে নতুন মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিশ্বের সব প্রান্তের জলবায়ুবিষয়ক সব পূর্বাভাস এবং তথ্য-উপাত্ত সমন্বিতভাবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ঋতু ও সময়ভিত্তিক স্কেলের মাধ্যমে বিশ্ব জলবায়ুর পূর্বাভাস নির্ণয়। এর সঙ্গে সামাজিক কারণে, জলবায়ু পরিবর্তন ও এই পরিবর্তনের কারণে নানাবিধ প্রকৃতিগত সমস্যা যা কৃষিক্ষেত্রে বা খাদ্য নিরাপত্তা, বনবিষয়ক, জ্বালানি, পানি, স্বাস্থ্য, গ্রাম ও নগরায়ণ, পর্যটন, বন্যপ্রাণী, ব্যবসা, পরিবহন বা এককথায় যা মানুষের সমাজ অর্থনৈতিক জীবনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
উদ্যোক্তারা বলছেন, জলবায়ুবিষয়ক সব তথ্য-উপাত্ত আগামীতে মনুষ্য ও প্রকৃতিগত কারণে জলবায়ু পরিবর্তনরোধে সহায়ক হিসেবেই কাজ করবে, সে ক্ষেত্রে সম্মেলনে মূল বিষয়গুলো ছাড়াও কিছু সহায়ক বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যেমন জলবায়ু পূর্বাভাসের বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, প্রকৃতিগত সংকট ব্যবস্থারোধে প্রয়োজনীয় তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা। প্রকৃতির প্রভাব ও পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বিশ্ব মানবতাকে প্রকৃতিগত সংকটের পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ককরণ ব্যবস্থার সমন্বয় সাধন।
পরিবেশবাদীরা আশা করছেন, জলবায়ু সংকটের উন্নয়ন ঘটাতে বিজ্ঞানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সমন্বিত ব্যবস্থা যা আঞ্চলিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবেই করতে হবে এবং এই ব্যবস্থার কার্যকরী ব্যবহারের মাধ্যমে জলবায়ুর বৈসাদৃশ্য ঠেকাতে অনেকটাই সহায়ক হবে। তারা আরও বলেছেন, কোনো দেশ বা জাতি বা মহাদেশ এককভাবে বিশ্বকে রক্ষা করতে পারবে না, তাই দরকার সমন্বিত বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্ব কর্মসূচি।
জেনেভার বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে একটি বিশ্বজনীন সিদ্ধান্ত ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে পৃথিবীর ১৫০টি দেশের প্রায় এক হাজার ৫০০ বিজ্ঞানী, পরিবেশবাদী, সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও কর্মী এবং মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপ্রধানেরা অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জেনেভা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের পাশাপাশি সর্বমোট ২০ জন রাষ্ট্রপ্রধান সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া সম্মেলনে এসেছেন জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বান কি মুন। তবে এই জলবায়ু এবং জীববৈচিত্র্য সংকটরোধে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সমন্বিত বা বৈশ্বিক কাঠামোর সবটাই নির্ভর করবে বিশ্বব্যাপী মানব সমাজের এই বিষয়ে সচেতনতা ও সাবধানতার ওপর।
পশ্চিমা বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বনডাই- অক্সাইড গ্যাসের নির্গমন যেমন জলবায়ুর তাপমাত্রার বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে, পাশাপাশি আমাদের দেশের শিল্পকারখানাগুলোর রাসায়নিক বর্জ্য নদী-নালায় প্রবাহিত হয়ে পরিবেশ বিষময় করে তুলেছে। নদী-জলাশয় দখল বা বাড়ির আবর্জনা ছাদ বা বারান্দা থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার প্রবণতা বা যত্রতত্র প্লাস্টিক ব্যাগ বা বোতল ফেলে রেখে পরিবেশবান্ধব অবস্থা তৈরিতে অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে।
পৃথিবীকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রয়োজন মানবজাতির পরিবেশবান্ধব আচরণ আর তবেই বাঁচবে এই বসুন্ধরা।
সরাফ আহমেদ: প্রথম আলোর হ্যানোভার (জার্মানি) প্রতিনিধি।
No comments:
Post a Comment